রোগীর অযু ও সালাত
মুহাম্মাদ
সালেহ আল-উসাইমীন
طهارة المريض
وصلاته
(باللغة
البنغالية)
الشيخ محمد الصالح العثيمين
সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলা
জন্য, আমরা তার প্রশংসা করি, তার নিকট
সাহায্য চাই এবং তার নিকট ইস্তেগফার ও তাওবা করি। আল্লাহর নিকট পানাহ চাই আমাদের নফস
ও আমলের অনিষ্ট থেকে, আল্লাহ যাকে হিদায়াত করেন তার কোনো পথভ্রষ্টকারী
নেই এবং যাকে তিনি গোমরাহ করেন তার কোনো হিদায়াতকারী নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,
আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি এক,
তার কোনো শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর
বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ তাআলা সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন তার ওপর ও তার পরিবারের ওপর
এবং তার সকল সাহাবী ও অনুসারীর ওপর, যারা তাদের অনুসরণ করে ইহসানের সাথে।
অতঃপর, রোগীর অযু ও সালাতের ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে অত্র পুস্তিকা। রোগীর কতক বিধান রয়েছে যা তার সাথেই খাস। কারণ, সে যে অবস্থা অতিক্রম করে শরী‘আত সে মোতাবেক তাকে বিধান দিয়েছে।
বস্তুত আল্লাহ সহজ, সরল ও একনিষ্ঠ দীন দিয়ে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
প্রেরণ করেছেন। তিনি বলেন,
﴿وَمَا جَعَلَ عَلَيۡكُمۡ فِي ٱلدِّينِ مِنۡ حَرَجٖۚ ٧٨﴾ [الحج : ٧٨]
“দীনের ব্যাপারে তিনি তোমাদের ওপর কোনো কঠোরতা আরোপ করেন নি”।
[সূরা আল-হাজ, আয়াত: ৭৮]
অপর আয়াতে বলেন:
﴿يُرِيدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلۡيُسۡرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ ٱلۡعُسۡرَ ١٨٥﴾ [البقرة: ١٨٥]
“আল্লাহ তোমাদের
সহজ চান এবং কঠিন চান না”। [সূরা আল-বাকারাগ, আয়াত: ১৮৫]
অপর আয়াতে বলেন:
﴿فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ مَا ٱسۡتَطَعۡتُمۡ وَٱسۡمَعُواْ وَأَطِيعُواْ ١٦﴾ [التغابن : ١٦]
“অতএব, তোমরা যথাসাধ্য
আল্লাহকে ভয় কর এবং শ্রবণ কর এবং আনুগত্য কর”। [সূরা
আত-তাগাবুন, আয়াত: ১৬]
ইমাম
বুখারী রহ. আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«إِنَّ الدِّينَ يُسْرٌ»
“নিশ্চয় দীন সহজ”।[1]
ইবন
হিব্বান আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«وَإِذَا
أَمَرْتُكُمْ بِشَيْءٍ، فَأْتُوا مِنْهُ مَا اسْتَطَعْتُمْ»
“আমি যখন তোমাদেরকে
কোনো নির্দেশ করি, তোমরা তা সম্পাদন কর যতটুকু তোমাদের পক্ষে
সম্ভব হয়”।[2]
এসব নীতিমালা থেকে আল্লাহ তা‘আলা
রোগীর ওপর তার রোগ হিসেবে ইবাদতকে হালকা করেছেন, যেন তারা কোনো কষ্ট ও কাঠিন্যতা ছাড়াই
তার ইবাদত আঞ্জাম দিতে সক্ষম হয়। অতএব, সকল প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক রাব্বুল আলামীনের
জন্য।
রোগীর অযু
১. সালাতের পূর্বে রোগীর জন্য
ফরয হচ্ছে পানি দ্বারা পবিত্রতা হাসিল করা। অতএব, ছোট
নাপাকের জন্য অযু এবং বড় নাপাকের জন্য সে গোসল করবে।
২. যদি অপারগতা থাকে বা রোগ
বৃদ্ধির ভয় হয় বা সুস্থতা বিলম্ব হবে আশঙ্কা করে, তাহলে তায়াম্মুম
করবে।
৩. তায়াম্মুম করার নিয়ম:
পবিত্র মাটিতে দু’হাত একবার মারবে, অতঃপর উভয় হাত
দিয়ে প্রথমে চেহারা তারপর দুই কব্জি একটি দ্বারা অপরটি মাসেহ করবে। রোগী যদি নিজে তায়াম্মুম
করতে সক্ষম না হয় অন্য কেউ তাকে তায়াম্মুম করিয়ে দিবে। যেমন, অপর ব্যক্তি নিজের দুই
হাত পবিত্র মাটিতে মেরে তা দিয়ে রোগীর চেহারা ও দুই হাত মাসেহ করবে, যেমন রোগী নিজে অযু করতে সক্ষম না হলে অপর ব্যক্তি তাকে অযু করিয়ে দেয়।
৪. দেয়ালের উপর তায়াম্মুম করা
বৈধ, অনুরূপ তায়াম্মুম করা বৈধ পবিত্র বস্তুর উপর যদি তার উপর
ধুলো-বালি থাকে, দেয়াল যদি মাটি জাতীয় বস্তু ব্যতীত অন্য
কোনো বস্তু দ্বারা প্লাস্টার করা হয়, যেমন রঙের বার্নিশ, তার উপর তায়াম্মুম করা শুদ্ধ হবে না, তবে
তার উপর ধুলো-বালি থাকলে তায়াম্মুম শুদ্ধ হবে।
৫. যদি দেয়াল বা দেয়াল ব্যতীত
ধুলো-বালি বিশিষ্ট কোনো বস্তু না পাওয়া যায়, তাহলে রোমালের উপর বা কোনো পাত্রে ধুলো
রেখে তার উপর তায়াম্মুম করবে।
৬. সালাতের জন্য যখন
তায়াম্মুম করবে এবং পরবর্তী সালাত পর্যন্ত পবিত্র অবস্থায় থাকবে, তখন পরবর্তী সালাত পূর্বের তায়াম্মুম দ্বারা পড়া বৈধ, পুনরায় তায়াম্মুম
করা জরুরি নয়। কারণ,
সে পবিত্র, তায়াম্মুম ভঙ্গ হওয়ার কোনো কারণ সংঘটিত হয়
নি।
৭. রোগীর শরীর থেকে নাপাক দূর করা জরুরি, যদি সে নাপাক দূর করতে সক্ষম না হয় তবে নাপাক অবস্থাতেই
সালাত পড়বে এবং তা পুনরায় পড়তে হবে না।
৮. রোগীর
নাপাক কাপড় পাক করা অথবা নাপাক কাপড় খুলে পবিত্র কাপড় পরিধান করা জরুরি, যদি পরিবর্তন করতে সক্ষম না হয় নাপাক কাপড়সহ সালাত পড়বে, পুনরায় তা
পড়তে হবে না।
৯. পাক বিছানার উপর রোগীর
সালাত আদায় করা জরুরি, যদি বিছানা পাক না হয় পাক করে নিবে
অথবা পাক বিছানা দিয়ে পাল্টে নিবে অথবা নাপাক বিছানার উপর পবিত্র বিছানা বিছিয়ে নিবে,
আর যদি কোনোটাই সক্ষম না হয় নাপাক বিছানার উপর সালাত পড়বে, এ অবস্থাতেও পুনরায় তা পড়তে হবে না।
No comments:
Post a Comment
We will tell you the answer. Thank You .