Search This Blog

Sunday, June 28, 2020

Special Places of Hajj Du'a┃ হজে দো‘আ কবুলের বিশেষ স্থানসমূহ



হজে দো‘আ কবুলের বিশেষ স্থানসমূহ


أماكن يرجى فيها قبول الدعاء في الحج






 দো‘আ একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল-ইবাদত আমরা সব সময় দো‘আর প্রতি মুখাপেক্ষী। হজের সময় হাজীদের জন্য দো‘আ-মোনাজাত করা ও জীবনের যত চাওয়া-পাওয়া আছে, সবকিছু আল্লাহর কাছে তুলে ধরার একটি সুবর্ণ সুযোগ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবীগণ যখন, যেখানে এবং যেভাবে দো‘আ করেছেন সেভাবেই এ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতটি সম্পাদন করতে হবে। হজে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেখানে যেভাবে দো‘আ করেছেন, আমরা তার বিশেষ কয়েকটি স্থান ও কাল এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
এক- আল্লাহর ঘর-বাইতুল্লাহর তাওয়াফের সময় দো‘আ করা:
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাওয়াফের মাঝে রুকনে ইয়ামানী এবং হাজরে আসওয়াদের মাঝে দো‘আ করতেন। তিনি যে দো‘আটি সকলকে শিখিয়েছেন তা হচ্ছে:
﴿رَبَّنَآ ءَاتِنَا فِي ٱلدُّنۡيَا حَسَنَةٗ وَفِي ٱلۡأٓخِرَةِ حَسَنَةٗ وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ٢٠١﴾ [البقرة: ٢٠١] 
“হে আমাদের রব, দুনিয়াতে আমাদেরকে কল্যাণ দিন, আখিরাতেও দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচান”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২০১]
দুই- যমযমের পানি পানের সময় দো‘আ:
যমযমের পানি পান করার সময় সু্ন্নাতসম্মত দো‘আ রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন,
«مَاءُ زَمْزَمَ، لِمَا شُرِبَ لَهُ ».
‘যমযম যে জন্য পান করা হয় তা হাসিল হয়।’[1] এটি দো‘আ কবলের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
তাছাড়া হাজরে আসওয়াদ থেকে কাবা শরীফের দরজা পর্যন্ত জায়গাটুকুকে মুলতাজাম বলে। সাহাবীগণের কেউ কেউ এবং সালাফের কোনো কোনো আলেম মক্কায় এসে মুলতাযামে গিয়ে দু’ হাতের তালু, দু’হাত, চেহারা ও বক্ষ তার উপর রেখে দো‘আ ও কান্নাকাটি করতেন।


[1] সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩০৬২।

তিন- সাফা ও মারওয়া পাহাড়-দ্বয়ে উঠে দো‘আ করা:
সাফা ও মারওয়া পাহাড়-দ্বয় আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম নিদর্শন। এ দুই পাহাড়ের মাঝে সাঈ করা হাজীদের জন্য ওয়াজিব। উভয় পাহাড়ই দো‘আ করা ও দো‘আ কবুল হওয়ার অন্যতম স্থান। সাফা পাহাড়ে উঠে একটু নিরিবিলি স্থান বাচাই করে কাবাকে সামনে নিয়ে দু’ হাত তুলে দীর্ঘ সময় নিয়ে দো‘আ করবেন। আরবীতে দো‘আ করা জরুরি নয়। আপনি আপনার ভাষায় যত চাওয়া–পাওয়া আছে সব আল্লাহর কাছে তুলে ধরবেন, চোখের পানি ফেলবেন এ সুযোগ আপনার জীবনে আর নাও আসতে পারে। তারপর যখন আপনি মারওয়া পাহাড়ে যাবেন সেখানেও একই নিয়মে দীর্ঘ সময় নিয়ে দো‘আ করবেন। তবে এখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত দো‘আটি করার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবেন।
চার- ‘আরাফার মাঠে দো‘আ করা:
‘আরাফার মাঠে ‘আরাফার দিবসের মুল আমলই দো‘আএ দিন দো‘আ মোনাজাতের গুরুত্ব অপরিসীম। জোহর ও আসরের সালাতকে জোহরের প্রথম ওয়াক্তের মধ্যে একত্রে আদায় করে নিবে। কোনো সুন্নাত বা নফল সালাত আদায় না করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সময় দো‘আ মোনাজাত ও কান্না-কাটিতে ব্যস্ত থাকবে। দু’হাত তুলে আল্লাহর কাছে দো‘আ করবে। হাদীসে এসেছে:
«خير الدعاء دعاء عرفة، وخير ما قلت أنا والنبيون من قبلي: لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمد، وهو على كل شيء قدير».
“উত্তম দো‘আ, আরাফার দিবসের দো‘আ এবং উত্তম কথা, যা আমি এবং আমার পূর্বের নবীগণ বলেছেন ‘আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসাও তার, তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান”[2]


[2] তিরমিযী, হাদীস, নং ৩৫৮৫

পাঁচ- মুযদালিফায় মাশআরুল হারামে অবস্থান করে দো‘আ করা:
মুযদালিফায় অবস্থান কালে দো‘আ করা। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
﴿فَإِذَآ أَفَضۡتُم مِّنۡ عَرَفَٰتٖ فَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ عِندَ ٱلۡمَشۡعَرِ ٱلۡحَرَامِ﴾ [البقرة: ١٩٨]
“তোমরা যখন ‘আরাফা থেকে প্রত্যাবর্তন করবে, মাশআরুল হারামের নিকট পৌঁছে আল্লাহকে স্মরণ করবে” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৯৮]
সুবহে সাদেক উদিত হওয়ার পর প্রথম ওয়াক্তে ফজরের সালাত আদায় করে নিবে। তারপর দু’ হাত তুলে কিবলামূখী হয়ে দো‘আ ও মোন
মোনাজাতে মশগুল থাকবেনরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযদালিফায় ফজরের সালাত আদায়ের পর ‘কুযা’ পাহাড়ের পাদদেশে গিয়ে উপস্থিত হতেন এবং সেখানে তিনি উকুফ করতেন। এ স্থানটি বর্তমানে মাশআরুল হারাম মসজিদের সম্মুখ ভাগে অবস্থিত। একেবারে আকাশ পরিষ্কার হওয়া পর্যন্ত দো‘আ ও মোনাজাতে মশগুল থাকতে হয়। মূলতঃ এটিই হলো মুযদালিফার মৌলিক আমল।
ছয়- কঙ্কর নিক্ষেপের পর দো‘আ করা:
তাশরীকের দিনসমূহে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। ছোট জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপ শেষ হলে একটু সামনে এগিয়ে ছোট জামরাকে পিছনে দিয়ে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়াবেন। তারপর আল্লাহর প্রশংসা, বড়ত্ব ও গুণাগুণ বর্ণনা করবেন এবং দু’হাত তুলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দো‘আ মোনাজাত করবেন। এরপর মধ্য জামরার দিক এগিয়ে যাবেন। এখানেও ৭টি কঙ্কর একই নিয়মে নিক্ষেপ করবেন। কঙ্কর নিক্ষেপের পর সামান্য এগিয়ে জামরাকে পিছনে দিয়ে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়াবেন। তারপর আল্লাহর প্রশংসা, বড়ত্ব ও গুণাগুণ বর্ণনা করবেন এবং দু’হাত তুলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দো‘আ মোনাজাত করবেন। এবার আপনি বড় জামরায় যাবেন এখানেও একই নিয়মে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। তবে এখানে কোন দো‘আ মোনাজাত করতে হবে না। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখানে দো‘আ করেন নি।
দো‘আর সময় বেশি বেশি কান্নাকাটি করার চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহর দিক মনোযোগী হয়ে দো‘আ করতে হবে। কারণ, অন্যমনস্ক হয়ে দো‘আ করলে আল্লাহ তা কবুল করেন না। দো‘আতে কোনো প্রকার বাড়াবাড়ি করা যাবে নাআল্লাহর উপর বিশ্বাস ও আস্থা রেখে দো‘আ করা খুবই জরুরী। আল্লাহ অবশ্যই আমার কথা শুনছেন এবং আমার দো‘আ কবুল করছেন। আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফীক দিন। আমীন

জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের

No comments:

Post a Comment

We will tell you the answer. Thank You .

JFPathagar

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Vestibulum rhoncus vehicula tortor, vel cursus elit. Donec nec nisl felis. Pellentesque ultrices sem sit amet eros interdum, id elementum nisi ermentum.Vestibulum rhoncus vehicula tortor, vel cursus elit. Donec nec nisl felis. Pellentesque ultrices sem sit amet eros interdum, id elementum nisi fermentum.




Comments

Contact Form

Name

Email *

Message *